উৎপাদন ও এর উপকরণসমূহের সম্পর্ক। এইচএসসি 2021 উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন [৫ম সপ্তাহ] এসাইনমেন্ট উত্তর।

আজ আমরা বাংলাদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত এইচএসসি 2021 সালের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন পঞ্চম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্টের নির্ভুল এবং পূর্ণাঙ্গ প্রশ্ন প্রকাশ করেছি। ফলে আপনি কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই আমাদের ওয়েবসাইট থেকে উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন পঞ্চম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট এর পূর্ণাঙ্গ উত্তর ডাউনলোড করে নিতে পারেন। প্রতিবারের মতো এবারও আমরা অত্যন্ত নির্ভুলভাবে উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন অ্যাসাইনমেন্টের সমাধান তৈরি করেছে যা ছাত্র-ছাত্রীদের সর্বোচ্চ নম্বর পেতে সহযোগিতা প্রদান করে। এইচএসসি 2021 উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন পঞ্চম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর পেতে নিচের অংশ ভালভাবে পড়ুন।

এইচএসসি 2021 উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন পঞ্চম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন

আমাদের ওয়েবসাইট থেকে যেকোনো বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর ডাউনলোড করার পূর্বে উক্ত বিষয়ে এর অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন ভালোভাবে বুঝে এবং প্রশ্নের নং অনুযায়ী অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর ডাউনলোড করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। যাতে করে ছাত্রছাত্রীদের এসাইনমেন্টের উত্তরে ভুল না হয়। এসএসসি 2021 সালে ব্যবস্থাপনা ও বিপণন পঞ্চম সপ্তাহের প্রশ্ন নিচে দেওয়া হল।

অ্যাসাইনমেন্টঃ ০৩

দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ উৎপাদনের উপকরণ

অ্যাসাইনমেন্টঃ

উৎপাদন ও এর উপকরণসমূহের সম্পর্ক।

নির্দেশনাঃ

  1. উৎপাদনের উপকরণ হিসেবে – ভূমির ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে হবে।
  2. শ্রমের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে হবে।
  3. মূলধনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে হবে।
  4. সংগঠনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে হবে।
  5. উপকরণের সাথে উৎপাদনের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করতে হবে।

এইচএসসি 2021 উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন ৫ম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

প্রিয় এইচএসসি 2021 সালের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আমাদের প্রকাশিত পোষ্টের নিচে আপনার কাংখিত উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন পঞ্চম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট এর পূর্ণাঙ্গ উত্তর দেওয়া আছে। চলুন দেখে নেয়া যাক। উত্তরঃ

ক) ভূমির ধারণা ও বৈশিষ্ট্যঃ

ভূমির ধারণাঃ ভূমি হল উৎপাদনের প্রথম ও মৌলিক উপাদান। সাধারণ ভাষায়, ভূমি বলতে ভূ-পৃষ্ঠকে বুঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে এটা বিশেষ অর্থে ব্যবহার করা হয়। অর্থনীতিতে কেবল পৃথিবীর উপরিভাগকে ভূমি বলা হয় না। অর্থনীতিতে ভূমি বলতে প্রকৃতির অবারিত দান সকল সম্পদকেই বুঝায়। অতএব, ভূমির উপরিভাগ, মাটির উর্বরতা, আলাে, বাতাস, তাপ, আবহাওয়া, জলবায়ু, বৃষ্টিপাত, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত, খনি, বন, মৎস্যক্ষেত্র প্রভৃতি ভূমির অন্তর্ভুক্ত। ভূমি দ্রব্য উৎপাদনের প্রাথমিক ও প্রধান উপকরণ। কৃষি, বন, খনি এবং মৎসক্ষেত্রের বেলায় ভূমির গুরুত্ব সর্বাধিক। অর্থনীতিবিদ মার্শালের মতে ভূমি হল ঐ সমস্ত বস্তু বা নৈস্বর্গিক শক্তি যা মানুষের কল্যানে প্রকৃতি অবারিত দান করেছেন। এ সংজ্ঞানুযায়ী মৃত্তিকা, আলাে, বাতাস, পানি, খনিজ সম্পদ, বৃক্ষ তরুলতা, পশু-পক্ষী সবই ভূমির অন্তর্গত। মানুষ এগুলাে সৃষ্টি করতে পারে না। সুতরাং উৎপাদন কার্যে সহায়ক প্রাকৃতিক সকল সম্পদকে অর্থনীতিতে ভূমি বলা হয়।

ভূমির বৈশিষ্ট্য (Features of Land):

১। ভূমি প্রকৃতির দানঃ মাটি, বায়ু, বৃষ্টি, সমুদ্র, নদী-নালা, খনি এবং ভূউপরিস্থ সবকিছুই প্রকৃতি প্রদত্ত দান। ভূমি হচ্ছে উৎপাদনের মূল উপাদান।

২। ভূমির যােগান স্থিরঃভূমির যােগান বাড়ানাে বা কমানাে যায় । উৎপাদনের সকল উপাদান সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয় কিন্তু ভূমির যােগান। নির্ভরশীলপ্রকৃতির উপর।

৩ ভূমি স্থায়ী উপাদানঃভূমি একটি স্থায়ী উপাদান। অর্থাৎ ইহা কখনও নিঃশেষ হয়ে যায় না। কিন্তু অন্যান্য উপাদান যেমন শ্রম, মূলধন, সংগঠন ইত্যাদি অস্থায়ী।

৪। গতিশীলতার অভাবঃ ভূমি স্থানানন্তর করা যায় না অর্থাৎ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ভৌগলিক দিক থেকে ভূমির গতিশীলতা নেই। কিন্তু শ্রম, মূলধন ও সংগঠনের ভৌগলিক গতিশীলতা রয়েছে।

৫। ভূমি উর্বরাশক্তির তারতম্য: সকল ভূমি একই গুণ সম্পন্ন নয়। অর্থাৎ সকল ভূমির উর্বরতা শক্তি এক নয়। অর্থাৎ এক জায়গার জমিতে যে ফসল উৎপন্ন হয় অন্য জায়গায় জমিতে তা নাও উৎপাদিত হতে পারে। অর্থাৎ কোনাে জমি উর্বরতার দিক থেকে অন্যটির চেয়ে উন্নত হতে পারে।

৬। ভূমিতে হ্রাসমান উৎপাদন বিধি কার্যকর কোনাে জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যে বেশি পরিমাণ শ্রম ও মূলধন নিয়ােগ করলেও উৎপাদন এক সময় ক্রমহ্রাসমান উৎপাদন বিশ্ব কমে যায়। এটাই হচ্ছে

(খ) শ্রমের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যঃ

শ্রমের ধারণাঃ সাধারণ অর্থে শ্রম বলতে মানুষের কায়িক পরিশ্রমকে বুঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে শ্রম শব্দটি বিশেষ ও ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়। উৎপাদন কাজে নিয়ােজিত সকল প্রকার শারীরিক ও মানসিক কাজ ও সেবাকর্ম এবং যার বিনিময়ে পরিশ্রমিক পাওয়া যায় তাকেই শ্রম বলা হয়। কোনরূপ অর্থ উপার্জন ছাড়া কেবল স্নেহের জন্য বা আনন্দ লাভের জন্য যে পরিশ্রম করা হয় তা শ্রম নয়। তাই সন্তান প্রতিপালনের জন্য মাতা-পিতার পরিশ্রম বা কষ্টকে শ্রম বলা হয়।

শ্রমের বৈশিষ্ট্যঃ

শ্রম উৎপাদনের একটি আদি ও মৌলিক উপাদান। উৎপাদনের উপাদান হিসেবে শ্রমের কতকগুলাে বৈশিষ্ট্য আছে। নিচে এগুলাে আলােচনা করা হল :

১ঃশ্রম একটি জীবন্ত উপাদানঃশ্রমের প্রধান বৈশিষ্ট্য এই যে, এটি ভূমি ও মূলধনের মতাে প্রাণহীন একটি জড় পদার্থ নয়। শ্রম শ্রমিকের দৈহিক ও মানসিক শক্তি একটি জীবন্ত উপাদান। পারিশ্রমিকের জন্য শ্রমিক পরিশ্রম দিলেও তার অনুভূতি সত্ত্বা থাকে। শ্রমিকের জীবদ্দশায় তার শ্রম জীবন্ত ও কর্মক্ষম থাকে।

২. শ্রম ও শ্রমিক অবিচ্ছেদ্যঃ শ্রমের অন্য একটি বৈশিষ্ট্য হল যে শ্রমিক ও শ্রম অবিচ্ছেদ্য। ভূমি ও ভূমির মালিক, মূলধন ও মূলধনের মালিক এক নয়, এরা স্বতন্ত্র। কিন্তু শ্রমিক থেকে শ্রমকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না।

৩. শ্রম গতিশীলঃ শ্রমের আর একটি বৈশিষ্ট্য হল যে এটি অন্যান্য উৎপাদনের তুলনায় গতিশীল। ভূমির কোন ভৌগােলিক গতিশীলতা নেই, মূলধনের গতিশীলতাও কম। কিন্তু শ্রম অত্যন্ত গতিশীল। কারণ, বিশেষ করে বর্তমানকালে শ্রমিক একস্থান থেকে অন্যস্থানে, এক পেশা থেকে অন্য পেশায় চলে যেতে পারে।

৪. শ্ৰম ক্ষণস্থায়ী: শ্রমের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল যে, এটি ক্ষণস্থায়ী এবং এর সঞ্চয় সম্ভব নয়। অন্যান্য উপাদান যেমন, ভূমি ও মূলধন কিছুকাল ব্যবহার না করলেও তা ধ্বংস হয়ে যায়; কিন্তু শ্রম উৎপাদন কাজে ব্যবহার না করলে নষ্ট হয়ে যায়। কোন শ্রমিক একদিন বা এক ঘন্টা কাজ না করলে ঐ সময় নষ্ট হয়ে যায়, যা কোনদিন ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।

৫. শ্রমিকের দর কষাকষির ক্ষমতা কম: উদ্বৃত্ত শ্রমিকের দেশে বিশেষ করে শ্রমের ক্ষণস্থায়ী চরিত্রের কারণে দর কষাকষিতে শ্রমিকদের অবস্থান সুবধািজনক হয় না। বেশি দিন বেকার থাকার ঝুঁকি অনেকে নিতে চান না। এজন্য স্বল্প মজুরীতে অনেক শ্রমিক কাজ করেন। অবশ্য শ্রমিকগণ ট্রেড ইউনিয়নের মাধ্যমে মালিক পক্ষের সাথে দর কষাকষি করতে পারে।

৬. উৎপাদন ক্ষেত্রে শ্রমিকের উপস্থিতি অপরিহার্য:জমিতে ফসল ফলাতে জমির মালিকের উপস্থিতি অপরিহার্য নয়। কিন্তু উৎপাদনের সময় শ্রমিকের উপস্থিতি অপরিহার্য। স্বশরীরে উপস্থিত থেকেই তাকে শ্রমের যােগান দিতে হয়।

৭. শ্রমের যােগানের হ্রাসবৃদ্ধি সময় সাপেক্ষ: শ্রমের যােগান ভূমির মতাে একেবারে নির্দিষ্ট না হলেও এর হ্রাস বৃদ্ধি সময় সাপেক্ষ। তাই শ্রমের চাহিদা পরিবর্তনের সাথে সাথে এর যােগানের পরিবর্তন সম্ভব নয়। কারণ, শ্রমের যােগান একটি দেশের জন্মহার, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ প্রভৃতি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। তাই মজুরী বাড়লেও শ্রমের যােগান দ্রুত বাড়ে না, আবার মজুরী কমলেও যােগান দ্রুত কমেনা। তাই স্বল্পকালে শ্রমিকের যােগান সীমাবদ্ধ থাকে।

(গ) মূলধনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যঃ

মূলধনের ধারণাঃ

সাধারণ অর্থে, পুঁজি বাফhabuddin বলতে ব্যবসায়ে নিয়ােজিত টাকা পয়সাকে বুঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে মূলধন শব্দটি বিশেষ অর্থ জ্ঞাপন করে। মানুষের শ্রমের দ্বারা উৎপাদিত দ্রব্য সামগ্রীর যে অংশ সরাসরি ভােগের জন্য ব্যয়িত না হয়ে পুনরায় উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয় এবং নতুন আয় প্রবাহ সৃষ্টি করে তাকে মূলধন বলে। মূলধন মানব সৃষ্ট, প্রকৃতি প্রদত্ত নয়। যেমন, বঙ্গবন্ধু বহুমুখী যমুনা সেতু, রেল লাইন, কারখানা, কাঁচামাল, কৃষকের লাঙ্গল, অফিস, গুদাম, ওয়ারলেস সেট ইত্যাদি মূলধন। অর্থনীতিবিদ বম ওয়ার্কের ভাষায়, মূলধন উৎপাদনের উৎপাদিত উপাদান। (Capital is the produced means of production)।

অর্থনীতিবিদ চ্যাপম্যান বলেন, “যে সম্পদ কোন আয় সৃষ্টি করে অথবা উপার্জনে সহায়তা করে রে তা-ই হল মূলধন। (capital is wealth which yields an income or aids in the production of an income)। কোন দ্রব্য মূলধন হিসেবে গণ্য হবে কিনা তা ঐ দ্রব্যের ব্যবহারের উপর নির্ভর করে। বাড়ী-ঘর যখন বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয় তখন এটা মূলধন নয়। কিন্তু ঐ বাড়ী-ঘর যদি অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হয় তখন এটা মূলধন। সুতরাং যে সব দ্রব্য সামগ্রী মানুষের শ্রম দ্বারা উৎপাদিত এবং যা বর্তমান ভােগের জন্য ব্যবহৃত না হয়ে অধিক উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয় তাকেই অর্থনীতিতে পুঁজি বা মূলধন বলা হয়।

মূলধনের বৈশিষ্ট্যঃ

মূলধন হল উৎপাদনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নিম্নে বর্ণিত বৈশিষ্ট্যসমূহের জন্য মূলধনকে অন্যান্য উপাদান থেকে পৃথক বলে গণ্য করা হয়। যথা :

১. মূলধন উৎপাদনশীল :আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থা মূলধনের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। পুঁজি উৎপাদন ক্ষেত্রে মূলধনের গুরুত্ব আরাে অধিক। যেমন, খালি হাতের চেয়ে জাল দিয়ে অধিক পরিমাণ মাছ ধরা যায়। অত্যাধুনিক জালের সাহায্যে আরাে অধিক পরিমাণ মাছ ধরা হয়। সুতরাং পুঁজি নতুন পণ্য ও সেবা উৎপাদন করতে সাহায্য করে।

২. মূলধন উৎপাদনের উৎপাদিত উপাদান:মূলধনের অপর বৈশিষ্ট্য হল যে, এটি উৎপাদনের উৎপাদিত উপাদান। ভূমি বা শ্রমের ন্যায় মূলধন কোন মৌলিক উৎপাদন নয়। মানুষের শ্রম ও প্রাকৃতিক সম্পদের যৌথ প্রচেষ্টায় মূলধন সৃষ্টি হয় যা মানুষ সরাসরি ভােগ না করে ভবিষ্যৎ উৎপাদন কার্যে ব্যবহার করে।

৩. মূলধন অতীত শ্রমের ফল :মূলধন মানুষের অতীত শ্রমের পুঞ্জিভূত ফল। যন্ত্রপাতি, কল-কারখানা, কাঁচামাল প্রভৃতি দ্রব্যাদি যা মূলধন হিসেবে গণ্য হয় তা মানুষের পরিশ্রমের দ্বারা সৃষ্টি। জমির মতাে এটি প্রাকৃতিক উপাদান নয়।

৪. মূলধন সঞ্চয়ের ফল: মূলধন হল সঞ্চয়ের ফল। মূলধন বৃদ্ধির জন্য সঞ্চয়ের প্রয়ােজন হয়। মূলধন গঠন করতে হলে বর্তমান আয় বা উৎপাদনের একটি অংশ ভােগে না লাগিয়ে উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা হয়। তাই মূলধন সৃষ্টি করতে মানুষকে তার আয়ের একাংশ বর্তমান ভােগে ব্যবহার না করে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে হবে।

৫. মূলধন অস্থায়ী:মূলধন স্থায়ী সম্পদ নয়-এর ক্ষয়ক্ষতি আছে। যন্ত্রপাতি বা ঘরবাড়ীর আয়ুষ্কাল নির্দিষ্ট। দীর্ঘ ব্যবহারের ফলে মূলধন দ্রব্যসামগ্রী ক্ষয় প্রাপ্ত হয় এবং অকেজো হয়ে পড়ে। ফলে এর পরিবর্তন প্রয়ােজন হয়ে দাঁড়ায়।

৬.মূলধনের উৎপাদন খরচ আছে :মূলধন মানুষ দ্বারা উৎপাদিত মূলধন প্রাকৃতিক সম্পদ নয়। তাই মূলধনের উৎপাদন খরচ আছে।

৭. মূলধন সমজাতীয় সকল মূলধন একই গুণসম্পন্ন নয়। বিভিন্ন মূলধনের গুণগত পার্থক্য আছে এটি স্বতন্ত্র ক্রিয়াসম্পন্ন বিবিধ বস্তুর একটি জটিল সমষ্টি।

৮, মূলধন আয়ের উৎস: মূলধন ব্যবহারের প্রধান উদ্দেশ্য হল ভবিষ্যৎ আয়ের পথ সৃষ্টি করা। মূলধন ব্যবহার করলে উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং অতিরিক্ত আয় সৃষ্টি হয়। এজন্য অধ্যাপক মার্শাল মূলধনকে আয়ের উৎস হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

(ঘ) সংগঠনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যঃ

সংগঠনের ধারণাঃ

উৎপাদনে চতুর্থ ও সর্বশেষ উপাদান হল সংগঠন। উৎপাদনের জন্য প্রয়ােজনীয় উপদানগুলিকে একত্রিত করে তাদেরকে একত্রিত ও সমন্বয় সাধনের কাজ যে করে তাকে সংগঠক বা উদ্যোক্তা বলে। সমন্বয় সাধনের কাজকে সংগঠন বলে এবং এ কাজ যে করে তাকে সংগঠক বা উদ্যোক্তা বলে। শুধুমাত্র ভূমি, শ্রম ও মূলধন কোন কিছু উৎপাদন করতে পারে না। আধুনিককালে উৎপাদন ব্যবস্থা জটিলতর ও ঝুঁকিপূর্ণ আকার ধারণ করছে। একদিকে আধুনিক প্রযুক্তি ও কলকারখানার আবিষ্কার বৃহদায়তন উৎপাদন ব্যবস্থার প্রসার ঘটাচ্ছে, অন্যদিকে শ্রমিকদের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, শ্রম বিভাগ সম্প্রসারিত হচ্ছে, শ্রমিক সংগঠন মালিক বা উদ্যোক্তাগণের জন্য জটিলতা সৃষ্টি করছে। এসব মিলিয়ে সংগঠনের দায়িত্ব ও গুরুত্ব উত্তরােত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শিল্প উৎপাদনে বিনিয়ােগ, মূলধন সংগ্রহ, দক্ষ শ্রমিক নিয়ােগ, তত্ত্বাবধান, যন্ত্রপাতি ও জনবল নির্বাচন ও সংগ্রহ প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হয়। উৎপাদনের সকল উপাদান একত্রিতকরণ, তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধনে যে ব্যক্তি নিয়ােজিত থাকে তাকে সংগঠক বা উদ্যোক্তা এবং যে প্রতিষ্ঠান এসব কাজ করে তাকে সংগঠন বলা হয়। নয়া ক্লাসিকেল অর্থনীতিবিদগণ সংগঠনকে উৎপাদনের একটি আলাদা উপাদান হিসেবে গণ্য করেছেন। তাঁদের মতে সংগঠনের একটি স্বতন্ত্র ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু অনেক অর্থনীতিবিদ সংগঠনকে পৃথক উপাদান হিসেবে বিবেচনা করেন না। তাঁদের মতে সংগঠক ও এক বিশেষ ধরনের শ্রম মাত্র। সংগঠকদের মধ্যে যে বিচক্ষণতা ও কর্মনৈপুণ্যতা বিদ্যমান তা কমবেশি অন্যান্য শ্রমিকদের মধ্যে আছে, সুতরাং সংগঠক ও শ্রমিকদের মধ্যে পার্থক্য পরিমাণগত, গুণগত নয়।

সংগঠনের বৈশিষ্ট্যঃ

সংগঠন হলাে এক বিশেষ ধরনের শ্রম যার কতকগুলি বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন

(ক) সংগঠন উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত

(খ) এটি একটি জীবন্ত উপকরণ

(গ) উৎপাদনের সাথে ঝুকি বহনের মানুষিক সক্ষমতা

(ঘ) সমাজের উদ্যোগী কর্মকুশল ও সম্পদশালী ব্যক্তিরা এর সাথে জড়িত।

(ঙ) উপকরণ ও উৎপাদনের সম্পর্কঃ

কোন কিছুর উৎপাদন উপকরণের উপর নির্ভর করে। আবার উৎপাদনের পরিমাণ উপকরনের পরিমাণের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং আমরা বলতে পারি, কোন দ্রব্য উৎপাদন করতে গেলে যে সব বস্তু বা সেবা কার্যের প্রয়ােজন হয় তাদেরকেই যৌথভাবে উৎপাদনের উপকরণ বলা হয়। উৎপাদনের উপকরণ সাধারণত: চার ভাগে ভাগ করা যায়।

(১) ভূমি (Land),

(২) শ্ৰম (Labour)

(৩) মূলধন (capital), এবং

(৪) সংগঠন (Organization) বা উদ্যোক্তা (Entrepreneur)।

আমরা জানি, কোন দ্রব্যের মােট উৎপাদন উপকরণ সমূহের পরিমাণের উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ উৎপাদনকারী যখন উৎপাদন বাড়াতে চায় তখন উপকরণের পরিমাণও বাড়াতে হবে। কিন্তু উৎপাদনের সকল ক্ষেত্রে উপকরণ ব্যবহারের অনুপাত সমান হয় না। উৎপাদনের পরিমাণ কখনাে বেশী হারে বাড়ে, কখনাে কম হারে বাড়ে, কখনাে সমহারে বাড়ে।

See More:

এইচএসসি 2021 হিসাববিজ্ঞান [৫ম সপ্তাহ] এসাইনমেন্ট উত্তর। HSC Exam-2021

Check Also

১০ম শ্রেণি [৩য় সপ্তাহ] বাংলা এসাইনমেন্ট উত্তর 2022। Class 10 Bangla Assignment

আজ দশম শ্রেণীর 2022 শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের তৃতীয় সপ্তাহের জন্য নির্ধারিত বাংলা অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন প্রকাশিত …