এসএসসি ব্যাচ 2021 মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থীদের ইতিহাস প্রথম পত্র অ্যাসাইনমেন্টের নির্ভুল এবং পূর্ণাঙ্গ উত্তর প্রকাশ করা হলো। আপনারা আমাদের এই পোষ্টের মাধ্যমে এইচএসসি 2021 সালের ইতিহাস প্রথম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর যে চারটি প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে ক্রমিক অনুসারে প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ উত্তর পেয়ে যাবেন। দেহতও আমাদের ওয়েবসাইটের বিশেষজ্ঞ শিক্ষকগণ অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর তৈরি করেছেন। তাই আমাদের প্রকাশিত অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর ডাউনলোড করে আপনি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর এবং এ প্লাস পেতে পারেন। এইচএসসি 2021 সালের মানবিক বিভাগের ইতিহাস প্রথম পত্র অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর ডাউনলোড করতে পোস্ট এর নিচের অংশে ভালভাবে পড়ুন।
এইচএসসি 2021 সালের ইতিহাস প্রথম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন
ছাত্র-ছাত্রীদের বুঝার সুবিধার্থে শুরুতেই ইতিহাস প্রথম পত্র প্রশ্ন তুলে ধরা হলো। অ্যাসাইনমেন্ট লেখার পূর্বে অবশ্যই প্রশ্ন ভালোভাবে পড়ে বুঝে পরবর্তীতে অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর ডাউনলোড করা অথবা নিজে হাতে খাতায় অ্যাসাইনমেন্ট লেখা শুরু করতে হবে। এতে অ্যাসাইনমেন্টে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এইচএসসি 2021 সালের ইতিহাস প্রথম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন নিচে দেওয়া হল।
তৃতীয় অধ্যায়ঃ ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসন: ব্রিটিশ আমল।
অ্যাসাইনমেন্টঃ
খিলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনের প্রকৃতি এবং ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাব ও এর বৈশিষ্ট্য নিরূপণ।
নির্দেশনাঃ
- খিলাফত আন্দোলনের প্রকৃতি ব্যাখ্যা। অসহযোগ আন্দোলনের প্রকৃতি ব্যাখ্যা।
- খিলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনের ফলাফল বিশ্লেষণ।
- লাহোর প্রস্তাবের প্রেক্ষাপট ও বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা।
শিখনফল বিষয়বস্তুঃ
- ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে ভারতবর্ষের খিলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করতে পারবে।
- ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতবর্ষের স্বাধিকার ও রাজনৈতিক আন্দোলনের ফলাফল মূল্যায়ন করতে পারবে।
- লাহোর প্রস্তাবের প্রেক্ষাপট ও বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করতে পারবে।
এইচএসসি 2021 সালের ইতিহাস প্রথম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর
প্রিয় এইচএসসি 2021 সালের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। চলুন দেরী না করে এসেছি 2021 সালের ইতিহাস প্রথম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর দেখে নেওয়া যাক। আপনি আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আছেন মেন্টের লিখিত উত্তরের পাশাপাশি এর পিডিএফ ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
উত্তরঃ
ক) খিলাফত আন্দোলনের প্রকৃতি:
ভারতের মুসলমানেরা তুরস্কের সুলতানকে মুসলিম বিশ্বের খলিফা বা ধর্মীয় নেতা বলে শ্রদ্ধা করতেন। কিন্তু তুরস্কের সুলতান ব্রিটিশবিরােধী শক্তি জার্মানির পক্ষ অবলম্বন করলে ভারতের মুসলমান সম্প্রদায় বিব্রত হন। কারণ ধর্মীয় কারণে তারা খলিফার অনুগত, আবার অন্যদিকে রাজনৈতিক কারণে ব্রিটিশ সরকারের অনুগত থাকতে বাধ্য। নিজ দেশের সরকার হিসেবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয় মুসলমানরা ব্রিটিশ সরকারকেই সমর্থন দিয়েছে। তবে শর্ত ছিল যে এই সমর্থনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সরকার তুরস্কের খলিফার কোনাে ক্ষতি করবে না। কন্তু যুদ্ধে জার্মানি হেরে গেলে তুরস্কের ভাগ্যবিপর্যয় ঘটে। যুদ্ধ শেষে জার্মানির পক্ষে যােগদানের জন্য ১৯২০ সালের সেভার্সের চক্তি অনুযায়ী
শাস্তিস্বরূপ তুরস্ককে খণ্ড-বিখণ্ডিত করার পরিকল্পনা করা হয়। এতে ভারতীয় মুসলমানরা মর্মাহত হয় এবং ভারতীয় মুসলমানরা খলিফার মর্যাদা এবং তুরস্কের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য তুমুল আন্দোলন গড়ে তােলে, যা ইতিহাসে খিলাফত আন্দোলন নামে খ্যাত। এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন দুই ভাই মাওলানা মােহাম্মদ আলী, মাওলানা শওকত আলী এবং মওলানা আবুল কালাম আজাদ।
(খ) অসহযােগ আন্দোলন প্রকৃতি :
ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেসেরঅসহযােগ আন্দোলনের পেছনে বিভিন্ন কারণ ছিল। ১৯২০ খ্রিঃ মহাত্তা গান্ধী অসহযােগ আন্দোলনের ডাক দেন। ১৯১৯ খ্রিঃ সংস্কার আইন ভারতবাসীর আশা-আকাঙ্খ পূরণে ব্যর্থ হয়। তাছাড়া ব্রিটিশ সরকারের দমননীতির কারণে ব্রিটিশবিরােধী আন্দোলনের নতুন ধারার জন্ম দেয়। ১৯১৯ সালে সরকার রাওলাট আইন পাস করে। এই আইনে যেকোনাে ব্যক্তিকে পরােয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার এবং সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়াই আদালতে দণ্ড দেয়ার ক্ষমতা পুলিশকে দেওয়া হয়। এই আইন ভারতের সর্বস্তরের মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তােলে। অহিংস আন্দোলনে বিশ্বাসী ভারতের রাজনীতিতে নবাগত (১৯১৭ খ্রিঃ যােগদান) মহাত্মা গান্ধীর ডাকে এই নিপীড়নমূলক আইনের বিরুদ্ধে ১৯১৯ খ্রিঃ ৬ এপ্রিল হরতাল পালিত হয়।
রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে অন্যান্য স্থানের মতাে পাঞ্জাবেও আন্দোলন ওঠে। ১৩ এপ্রিল পাঞ্জাবের অমৃতসরে এক সভায় জেনারেল ডায়ারের, নির্দেশে বহু নিরস্ত্র মানুষকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। ইতিহাসে এই নয়ায় হত্যাযজ্ঞের ঘটনা ‘জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড’ নামে পরিচিত। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য কংগ্রেস বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দকে নিয়ে এক তদন্তকমিটি গঠন করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ‘নাইট’ উপাধি বর্জন করেন। সরকারের দমননীতির পাশাপাশি চলে সংবাদপত্রে হস্তক্ষেপ। তাছাড়া মহাযুদ্ধের সৃষ্ট অর্থনৈতিক মহামন্দার কারণে নিত্যপ্রয়ােজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি পেলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেয়। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গান্ধীজি হিন্দুমুসলমান উভয় সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করে ১৯২৩ খ্রিঃ অহিংস অসহযােগ আন্দোলনের আহ্বান জানান। ১৯২০ খ্রিঃ খিলাফত আন্দোলন ও অসহযােগ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচির মাধ্যমে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তােলেন। ১৯২১-২২ সাল পর্যন্তএই আন্দোলন সর্বভারতীয় গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়।
(গ) খিলাফত ও অসহযােগ আন্দোলনের তাৎপর্য বিশ্লেষণ :
খিলাফত ও অসহযােগ আন্দোলন বিভিন্ন দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। এই আন্দোলনে | মাধ্যমে ভারতীয় মুসলমানরা যেমন প্রথমবারের মতাে ব্রিটিশবিরােধী আন্দোলনে যােগ দেয়, তেমন হিন্দু-মুসলিম
সম্প্রদায় প্রথমবারের মতাে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামে। কিছুদিনের জন্য হলেও ব্রিটিশ বিভেদ ও শাসননীতি ব্যর্থ হয়। ফলে হিন্দুমুসলমান ঐক্য ও সম্প্রীতির এক রাজনৈতিক আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়। অপর দিকে এই ঐক্য ব্রিটিশ সরকারকে শঙ্কিত করে তােলে। এই আন্দোলন শুধু শিক্ষিত মুসলমান যুবকদের নয়, সারা ভারতের জনগণের মধ্যে এক রাজনৈতিক চেতনা ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছিল। তবে এই আন্দোলন এবং হিন্দু-মুসলিম ঐক্য দুই-ই ছিল ক্ষণস্থায়ী। আন্দোলনের অবসানের সঙ্গে সঙ্গে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে আবার দূরত্ব সৃষ্টি হতে থাকে।
ঘ) লাহাের প্রস্তাবের প্রেক্ষাপট ও বৈশিষ্ট্য:
১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ লাহােরে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের বার্ষিক সম্মেলনে বাংলার কৃতি সন্তান শেরে বাংলা একে ফজলুল হক যে প্রস্তাব পাস করেন সে প্রস্তাব লাহাের প্রস্তাব নামে খ্যাত। লাহাের প্রস্তাবে বলা হয়, ভৌগােলিক অবস্থান অনুযায়ী সন্নিহিত স্থানসমূহকে অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। প্রয়ােজনমতাে সীমা পরিবর্তন করে যেসব স্থানে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ সেসব অঞ্চলসমূহের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এসব স্বাধীন রাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলাে হবে স্বায়ত্তশাসিত সার্বভৌম। রাহুল প্রস্তাবের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালের ১৪আগস্ট ভারত বিভক্ত হয়ে দুটি রাষ্ট্রের রূপান্তরিত হয়।
লাহাের প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য :
১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ অবিভক্ত পাঞ্জাবের রাজধানী লাহােরে নিখিল ভারত মুসলিমলীগের অধিবেশনে অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক “লাহাের প্রস্তাব পেশ করেন। বিপুল পরিমাণ উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ২৪ মার্চ প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। নিচে লাহাের প্রস্তাবের মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ দেওয়া হলাে:
১. ভারতবর্ষকে বিভক্ত করে এর উত্তর-পশ্চিম ও পূর্ব অঞ্চলে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা গুলাে নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহ গঠন করতে হবে।
2. স্বাধীন রাষ্ট্র সমূহের অধীন ইউনিট বা প্রদেশগুলাে স্বায়ত্তশাসিত ও সার্বভৌম হবে।
3.ভারতের অন্যান্য হিন্দু অঞ্চলগুলাের সমন্বয়ে পৃথক হিন্দু রাষ্ট্র গঠি হবে।
4.সংখ্যালঘু সম্প্রদায়েরপ্রস্তাবের তাৎপর্য সাথে পরামর্শ ভিত্তিতে তাদের স্বার্থ অধিকার ও রক্ষার জন্য সংবিধানের পর্যাপ্ত ক্ষমতা রাখতে হবে।
5. প্রতিরক্ষা, পরস্বরাষ্ট্র ও যােগাযােগ ইত্যাদি বিষয়ে ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট অঙ্গরাজ্যগুলাের উপর ন্যস্ত থাকবে।
অবশেষে বলা যায় যে, ঐতিহাসিক লাহাের প্রস্তাব অবিভক্ত ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে অনন্যসাধারণ ভূমিকা পালন করে। লাহাের প্রস্তাব গৃহীত হবার পর মুসলিম লীগের রাজনীতিতে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের সুযােগ উপস্থিত হয়।
আরও দেখুনঃ
এইচএসসি ব্যাচ-2021 অর্থনীতি ১ম সপ্তাহ এসাইনমেন্ট উত্তর। HSC Exam Batch-2021 অ্যাসাইনমেন্ট
2021 এইচএসসি সালের যুক্তিবিদ্যা ১ম সপ্তাহ এসাইনমেন্ট উত্তর। এইচএসসি পরীক্ষার্থী ব্যাচ-2021
সকল পোস্টের আপডেট পেতে নিচের ফেসবুক আইকনে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেইজে জয়েন করুন।