বিপণনের ধারণা, ক্রমবিকাশ ও বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ। এইচএসসি 2021 উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন [৩য় সপ্তাহ]

এইচএসসি 2021 সালের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন তৃতীয় সপ্তাহের নির্ভুল এবং পূর্ণাঙ্গ উত্তর প্রকাশ করা হলো। যারা এখনো পর্যন্ত উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন তৃতীয় সপ্তাহের পূর্ণাঙ্গ এবং নির্ভরযোগ্য উত্তর পাননি। অথবা এখনো পর্যন্ত উৎপাদন ব্যবস্থাপনা তৃতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন ও পাননি। তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন তৃতীয় সপ্তাহের নির্ভুল এবং পূর্ণাঙ্গ উত্তর ডাউনলোড করে নিতে পারেন। আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন যে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতিটি অ্যাসাইনমেন্ট এর সর্বোচ্চ নির্ভুল এবং সর্বোত্তম উত্তর প্রকাশ করে থাকি। ফলে আমাদের ওয়েবসাইটের থেকে অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর পেতে কিছুটা বিলম্ব হয়। এইচএসসি 2021 ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন তৃতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর পেতে শেষের অংশ ভালভাবে পড়ুন।

এইচএসসি উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন তৃতীয় সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন 2021

ছাত্র-ছাত্রীদের বোঝার সুবিধার্থে আমরা উত্তর প্রকাশের পূর্বে অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন পুনরায় তুলে ধরেছি। যাতে করে ছাত্র-ছাত্রীরা অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন ভালোভাবে বোঝে এবং প্রশ্নের নং অনুযায়ী উত্তর ডাউনলোড করে নিতে পারেন। নিচে এইচএসসি 2021 উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন তৃতীয় সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন তুলে ধরা হলো।

অ্যাসাইনমেন্টঃ

বিপণনের ধারণা, ক্রমবিকাশ ও বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ

নির্দেশনাঃ

  • বিপণনের ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে।
  • ক্রমবিকাশ বর্ণনা করতে হবে।
  • বিপণনের বৈশিষ্ট্যগুলো চিহ্নিত করতে হবে।
  • বাজার, বিক্রয় ও বিপণন এর মধ্যে পার্থক্য ব্যাখ্যা করতে হবে।

এইচএসসি উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন তৃতীয় সপ্তাহ এসাইনমেন্ট উত্তর 2021

প্রিয় এইচএসসি 2021 সালের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা। চলুন দেরী না করে উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন তৃতীয় সপ্তাহের সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ উত্তর দেখে নেয়া যাক।

উত্তরঃ

ক) বিপণনের ধারণা (Concept of Marketing):

মানুষ জন্মগ্রহণ করার পর থেকে আমৃত্যু বিভিন্ন পণ্য ব্যবহার করে। মানুষ বিভিন্ন প্রয়ােজনে তার চাহিদা মেটানাের জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরণের পণ্য বা সেবা ক্রয় ও ভােগ করে থাকে। ক্ষুধা নিবারণের জন্য খাবার ক্রয় করে, বাসস্থানের জন্য ঘর-বাড়ি ক্রয় করে আবার চিকিৎসার জন্য চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে। পণ্য বা সেবা ভােগ করার জন্য মানুষ নির্দিষ্ট বাজার থেকে যাচাই-বাছাই করে প্রয়ােজন অনুসারে ক্রয় ও ভােগ করে। লক্ষ্য করা যায় যে, পণ্য বা সেবার ধারণার সৃষ্টি থেকে শুরু করে, ক্রেতাদের মাঝে তা পরিচিতিকরণ, ক্রয়ে উৎসাহ প্রদান, পণ্য বণ্টন, মূল্য নির্ধারণ, ক্রয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা প্রদান এবং বিক্রয়ােত্তর সেবাসহ বিভিন্ন কাজের সাথে বিপণন বা বাজাজাতকরণ জড়িত।

ল্যাটিন শব্দ Marcatus থেকে ইংরেজী Market শব্দের উৎপত্তি। এই Market শব্দ থেকে পরবর্তীতে Marketing শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। এর বাংলা প্রতিশব্দ হলাে বিপণন বা বাজারজাতকরণ। অনেক সময়ই বিপণন বা মার্কেটিং দিয়ে শুধুমাত্র ক্রয়-বিক্রয় বা প্রচারণাকার্যকে বুঝানাে হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে ক্রয়-বিক্রয় বা প্রচারণা হচ্ছে বিপণনের অনেক কাজের অংশবিশেষ। বিপণন একটি পরিবর্তনশীল ও জটিল বিষয়। বর্তমান সময়ে বিপণন বলতে সন্তোষজনকভাবে ক্রেতা বা ভােক্তার প্রয়ােজনসমূহ পূরণকে বােঝায়। বিপণনের মূল উদ্দেশ্য হলাে ক্রেতা ভ্যালু বা সুবিধা সরবরাহের প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে নতুন ক্রেতাকে আকৃষ্ট করা এবং সন্তুষ্টি বিধানের মাধ্যমে বর্তমান ক্রেতাকে ধরে রাখা ও সন্তুষ্ট ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
বিপণনে উৎপাদক, ক্রেতা ও ভােক্তা সুপ্রচলিত কিছু শব্দ। পণ্যদ্রব্য উৎপাদনের সাথে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষঠান/ কোম্পানিকে উৎপাদক (Producer) বলে। যে ব্যক্তি বা কোম্পানি পণ্যদ্রব্য ক্রয় করে তাকে ক্রেতা বা (Customer) বলে। নিজে ভােগ করার জন্য কোন ব্যক্তি বা কোম্পানি যদি পণ্যদ্রব্য ক্রয় করে তাকে ভােক্তা বা (Consumer) বলে। কোন পণ্য ক্রয় ও ব্যবহারের ফলে যে সকল সুবিধা পাওয়া যায় ও পণ্য ক্রয় ও ব্যবহার করার জন্য যে সকল ব্যয় বহন করা হয়, তার পার্থক্যকে ক্রেতা ভ্যালু’ (Customer value) বলে। পণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে পণ্য ক্রেতা বা ভােক্তার নিকট পৌছে দেওয়া পর্যন্ত বিপণন বিভিন্ন ধরণের কাজের সাথে জড়িত থাকে।
বিপণনের কাজকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়; যথা- পণ্য উৎপাদনের পূর্বে, পণ্য উৎপাদনের পরে, এবং পণ্য বিক্রয় করার পরবর্তীতে। পণ্য উৎপাদনের পূর্বে বিপণনের কাজগুলাে হচ্ছে বাজার জরিপ, চাহিদা নির্ধারণ, অর্থ-সংস্থান, প্রতিযােগিদের চিহ্নিত করা ইত্যাদি। উৎপাদনের পরে বিপণনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলাে মান নির্ধারণ বিভক্তিকরণ, মােড়কীকরণ, মূল্য নির্ধারণ, পরিবহণ, গুদামজাতকরণ, বণ্টন, ঝুঁকিগ্রহণ, পণ্য প্রসার ইত্যাদি। সর্বশেষে পণ্য ভােক্তার কাছে পৌছে দেয়া অথবা পণ্য ভােক্তার কাছে বিক্রয় করা হলেই বিপণনের কার্যক্রম শেষ হয় না। ভােক্তার কাছে পৌঁছানাের পরও বাজারজাতকরনের কিছু কাজ থাকে। যেমন- বি যাত্তর সেবা প্রদান, ভােক্তা বা ক্রেতার সন্তুষ্টি পরিমাপ, সন্তুষ্টি বজায় রাখা এবং বৃদ্ধি করা, মার্কেটিং এর নানাবিধ কার্যক্রম মূল্যায়ণ করা।

খ) বিপণনের ক্রমবিকাশ (Evolution of Marketing):

মানব সভ্যতা ও ব্যবসায়িক পরিবেশের বিবর্তনের সাথে সাথে বিপণন ব্যবস্থার ক্রমবিকাশ ঘটেছে। বর্তমান সময়ে সকল ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে বিপণনের ব্যবহার দেখা যায়। বিপণনের ক্রমবিকাশ এ পর্যায়ে আলােচনা করা হলাে:
১. আত্মনির্ভরশীলতার যুগ (Era of self-Sufficiency): মানবসভ্যতার প্রথমদিকে মানুষ প্রয়ােজনীয় জিনিস নিজেই উৎপাদন করত ও মিলিতভাবে ভােগ করত। নিজেদের প্রয়ােজন মেটানাের পর উদ্বৃত্ত পণ্য সংরক্ষণ করার ধারণা ছিল । এ কারণে পণ্য বিনিময়ের কোন প্রয়ােজনীয়তা ছিল না। তাই বিপণনের ধারণাও বিদ্যমান ছিল না। এই সময়কে প্রাচীন সভ্যতার যুগও বলা হয়।
৩. উৎপাদন যুগ (Era of Production): উৎপাদন যুগের শুরু হিসেব ধরা হয় ১৮৭০ সাল থেকে যার ব্যাপ্তী ১৯৩০ সাল পর্যন্ত। পপণ্য বিনিময়ের মাধ্যমে লাভবান হবার ধারণা আসার পর উৎপাদনকারী অধিক উৎপাদনে। উৎসাহিত হয়। এই সময়ে উৎপাদনের উপর অধিক গুরুত্ব থাকার জন্য এই যুগকে উৎপাদন যুগ বলে। এই সময়ে উৎপাদনকারী অধিক পণ্য উৎপাদন করার জন্য পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ করার নিমিত্তে বিভিন্ন ধরণের যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করা শুরু করে ।
২. বিনিময় যুগ (Era of Exchange):সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের চিন্তা-চেতনার বিকাশ ঘটে। প্রাচীন আত্মনির্ভরশীলতার যুগের এক পর্যায়ে মানুষ লক্ষ করে যে, মানুষ নিজের প্রয়ােজন মেটানাের পরও উৎপাদিত পণ্য উদ্বৃত্ত থেকে যায়। আবার, একজন মানুষ তার প্রয়ােজনীয় সকল পণ্য একা উৎপাদন করতে পারে না এবং সব ধরণের পণ্য উৎপাদনে মানুষের পারদর্শীতাও নেই। এই পরিস্থিতিতে মানুষ যে ধরনের পণ্য উৎপাদনে পারদর্শী সেই পণ্য উৎপাদন করতে থাকে এবং উদ্বৃত্ত পণ্য একে অপরের সাথে বিনিময় করা শুরু করে। বিনিময় প্রথার (Barter System) এই সময়কে বিনিময় যুগ বলা হয়। এই সময়ে পণ্য বিনিময় করার জন্য ব্যবসায়ী শ্রেণির উদ্ভব হয় যারা নির্দিষ্ট স্থানে পণ্য আদান-প্রদান করত। ক্রমান্বয়ে বাজার, ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও বিপণনের ধারণা প্রবর্তিত হয়।
৪. বিক্রয় যুগ (Era of sales): ১৯৩০ থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত সময়কালকে বিক্রয় যুগ হিসেবে ধরা হয়। উৎপাদকের সংখ্যা ও উৎপাদনের দক্ষতা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে উৎপাদনের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর ফলে ভােক্তারা বিভিন্ন পণ্য থেকে পচ্ছন্দমতাে পণ্য ক্রয়ের সুযােগ পায়। উৎপাদনকারী উৎপাদিত পণ্যের বিক্রয় নিশ্চিত ও বৃদ্ধি করার জন্য বিক্রয়ের বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে থাকে। এই সময়ে উৎপাদনকারী বিক্রয় কৌশল হিসেবে বিজ্ঞাপন, ব্যক্তিক বিক্রয়, বিক্রয় প্রসার ইত্যাদি কৌশল প্রয়ােগ করে। বিক্রয় ও বিক্রয় কৌশলের প্রাধান্য থাকার জন্য এই সময়কে বিক্রয় যুগ বলা হয়।
 ৫. আধুনিক বিপণন যুগ (Era of Modern Marketing): আধুনিক বিপণন যুগের শুরু ১৯৫০ সাল থেকে যা এখনও চলমান। এই যুগে ভােক্তার প্রয়ােজন, অভাব ও চাহিদার বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রতিযােগিতা বেড়ে যাওয়ার কারণে ভােক্তার সন্তুষ্টির প্রতি খেয়াল রেখে পণ্য ও সেবা উৎপাদন ও বিপণন করার প্রয়ােজনীয়তা উপলব্ধি করা হয়। এই সময়েই ভােক্তাকেন্দ্রিক বিপণন কার্যক্রম শুরু হয়।
৬. সামাজিক বিপণন যুগ (Era of Social Marketing): ১৯৭২ সালের পরে সামাজিক বিপণন ধারণার উদ্ভব হয়। এই যুগে ভােক্তার সন্তুষ্টির সাথে সাথে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার বিষয়টি প্রাধান্য পায়। সামাজিক বিপণন যুগে সমাজ, পরিবেশ ও মানুষের কল্যাণের বিষয় বিবেচনায় রেখে ব্যবসায়ীরা প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জন ও ভােক্তার সন্তুষ্টি অর্জনে মনােনিবেশ করে। সমাজের জন্য কল্যাণকর ও পরিবেশ বান্ধব পণ্য ও সেবা উৎপাদন ও সরবরাহ করতে দেখা যায় এই সময়ে।
৭. সম্পর্কভিত্তিক বিপণন যুগ (Era of Relationship Marketing):সম্পর্কভিত্তিক বিপণন যুগ শুরু হয় ১৯৯০ সালে। বর্তমান যুগে ব্যবসায়ীরা ক্রেতা, ভােক্তা, সরবরাহকারী, উৎপাদনকারীসহ অন্যান্য সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে দীর্ঘমেয়াদী সুসম্পর্ক তৈরি ও সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। ভ্যালুভিত্তিক সুসম্পর্ক তৈরি ও সম্পর্ক রক্ষা করার উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য এই যুগকে সম্পর্কভিত্তিক বিপণন যুগ বলা হয়। ব্যবসায়ীরা এখন নতুন বা সম্ভাব্য ক্রেতা তৈরির চেয়ে বর্তমান ক্রেতার সাথে সুসম্পর্ক ধরে রাখার উপর বেশি গুরুত্বারােপ করছে।

বিপণনের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Marketing):

ভােক্তার প্রয়ােজন, চাহিদা ও সন্তুষ্টির উপর নির্ভর করে বিপণনের কার্যক্রম প্রবাহিত হয়। বিশেষজ্ঞগণ বিভিন্নভাবে বিপণনকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। তার প্রেক্ষিতে বিপণনের বৈশিষ্ট্যগুলাে নিম্নরূপ:
১. সামাজিক প্রক্রিয়া (Social Process): বিপণন একটি সামাজিক প্রক্রিয়া কারণ বিপণন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের অভাব, প্রয়ােজন ও চাহিদা অনুসারে পণ্য ও সেবা উৎপাদন করে সরবরাহ করে এবং তাদের সন্তুষ্ট করতে সচেষ্ট থাকে। আবার সামাজিক বিপণন মতবাদে সমাজের কল্যাণকে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া হয় যার ফলে সমাজের জন্য ক্ষতিকর পণ্য বা সেবা প্রস্তুত ও সরবরাহ থেকে বিরত রাখা হয়।
২.ব্যবস্থাপকীয় প্রক্রিয়া (Managerial Process): বিপণনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করার জন্য প্রতিটি পর্যায়ে সঠিক কৌশল অবলম্বনের জন্য ব্যবস্থাপনার কাজ করতে হয়। যেমনপরিকল্পনা গ্রহণ, সংগঠিতকরণ, প্রেষণা দান এবং নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কাজের সমন্বয়ে বিপণনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
৩. অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া (Economic Process): বিপণনের কার্যক্রমের সাথে অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার স্থানগত, সময়গত ও স্বত্বগত উপযােগ সৃষ্টির কাজ জড়িত। বিপণন পরিবহনের মাধ্যমে স্থানগত উপযােগ, গুদামজাতকরণের সাথে সময়গত এবং ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে স্বত্বগত উপযােগ সৃষ্টি করে। এ কারণে বিপণনকে অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া বলা হয়।
৪. বিনিময় প্রক্রিয়া (Exchange Process): ভােক্তা তার প্রয়ােজন ও চাহিদা পূরণের জন্য অর্থ বিনিময়ের মাধ্যমে পণ্য ও সেবার আদান-প্রদান করে থাকে বলে বিপণনকে বিনিময় প্রক্রিয়া বলা হয়ে থাকে। বিপণনকারী ভােক্তাদের সন্তুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী সুসম্পর্ক তৈরি ও বজায় রাখার জন্য বিপণনের কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে থাকে।
৫. ভােক্তামুখী প্রক্রিয়া (Consumer-oriented Process): আধুনিক বিপণনের মূলে রয়েছে ভােক্তার প্রয়ােজন, অভাব, চাহিদা ও সন্তুষ্টি। ভােক্তাকে কেন্দ্র করেই বিপণনের সামগ্রিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয় বলে বিপণনকে ভােক্তামুখী প্রক্রিয়া বলা হয়।
৬. গতিশীল প্রক্রিয়া (Dynamic Process):বিপণন একটি গতিশীল প্রক্রিয়া। সময়ের সাথে সাথে ভােক্তার রুচি, অভাব, প্রয়ােজন, চাহিদা, ক্রয় ক্ষমতা, ক্রয় আচরণ ইত্যাদি পরিবর্তিত হয়। শুধু তাই নয়, ব্যবসায়িক পরিবেশ এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও প্রযুক্তির পরিবর্তনের কারণে সামগ্রিক পরিবেশেও পরিবর্তন হচ্ছে। এর ফলে বিপণনকারী পরিবর্তিত অবস্থার সাথে তাল মেলাম জন্য নতুন নতুন। কৌশল অবলম্বন করে।
৭. অনুসন্ধানমূলক প্রক্রিয়া (Searching Process): বিপণনের কার্যাবলি অনুসন্ধানমূলক কাজের সাথে জড়িত। কারণ নতুন বাজার সৃষ্টি, নতুন ক্রেতা খুঁজে বের করা, নতুন পণ্য উন্নয়ন করা, প্রতিদ্বন্দ্বীদের কৌশল সম্পর্কে জানা, ক্রেতাদের নতুন নতুন পদ্ধতিতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বিপণনকারীকে সবসময়ই তথ্য অনুসন্ধান করতে হয়।
৮. মধ্যস্থকারীদের অবস্থান (Existance of Middlemen): বিপণন কার্যক্রমের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা ক্রেতা ও ভােক্তার নিকট পৌছে দেওয়া হয়। আর এই পণ্য সরবরাহের কাজে পাইকারী, খুচরা ব্যবসায়ী, প্রতিনিধি, পরিবেশক ইত্যাদি মধ্যস্থকারীদের ভূমিকা রয়েছে। সুতরাং বিপণনের কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য মধ্যস্থকারীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
৯. সমন্বিত প্রক্রিয়া (Integrated Process): বিপণনের কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য বিপণনের সাথে জড়িত বিভিন্ন কার্যাবলির সমন্বয় সাধন করতে হয়। বিপণনের যেকোন একটি কার্যের পরিবর্তন হলে অন্য কার্য বা কার্যাবলির পরিবর্তন হতে পারে, কারণ বিপণন কার্যাবলি বিচ্ছিন্ন কয়েকটি কাজের সমষ্টি নয়। উপরিউক্ত আলােচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বিপণন একটি সামগ্রিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোম্পানি ভােক্তার সন্তুষ্টি বিধানের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জন করে।

আরও দেখুনঃ

এইচএসসি 2021 হিসাববিজ্ঞান ৩য় সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর। HSC 2021 Accounting উত্তর

এইচএসসি ব্যাচ-2021 ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বীমা [৩য় সপ্তাহ] অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর। HSC Exam Batch-2021

সকল পোস্টের আপডেট পেতে ‍নিচের ফেসবুক আইকনে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেইজে জয়েন করুন।

Check Also

৮ম শ্রেণি [৩য় সপ্তাহ] বিজ্ঞান এসাইনমেন্ট উত্তর 2022। Class 8 {3rd-Week} Science

অষ্টম শ্রেণীর 2022 শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টের বিষয়গুলো হল বাংলা এবং বিজ্ঞান। যার প্রশ্ন ইতোমধ্যে …