তোমাদের সামাজিক জীবনের প্রচলিত চারটি লোকসংস্কৃতির উপাদান চিহ্নিত কর এবং এই উপাদানগুলো তোমার জীবনে কি ধরনের প্রভাব ফেলে তা বর্ণনা করো।

সপ্তম শ্রেণীর দশম সপ্তাহের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অ্যাসাইনমেন্টের এবং পূর্ণাঙ্গ উত্তর প্রকাশ করা হলো। আমরা বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে এর সঠিক উত্তর প্রকাশ করেছি। আপনি যদি সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হন এবং সপ্তম শ্রেণীর দশম সপ্তাহের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় আছেন বেনটের উত্তর চান তাহলে এই পোষ্ট টি আপনার জন্য। কেননা এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি আপনার কাঙ্খিত বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এসাইনমেন্ট এর সঠিক এবং নির্ভুল উত্তর পেয়ে যাবেন। সপ্তম শ্রেণীর দর্শন সপ্তাহের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর পেতে পুরোপুরি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

৭ম শ্রেণীর ১০ম সপ্তাহ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

সপ্তম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পাঠ্যবইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র থেকে একটি সৃজনশীল প্রশ্ন প্রদান করা হয়েছে। আমরা উক্ত সৃজনশীল প্রশ্নের সঠিক উত্তর তৈরি করে আপনাদের জন্য প্রকাশ করেছে। প্রশ্ন টি হলঃ

তোমাদের সামাজিক জীবনের প্রচলিত চারটি লোকসংস্কৃতির উপাদান চিহ্নিত কর এবং এই উপাদানগুলো তোমার জীবনে কি ধরনের প্রভাব ফেলে তা বর্ণনা করো।

  1. এই নির্ধারিত কাজটি করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে।
  2. লোকসংস্কৃতি সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান।
  3. প্রচলিত লোকসংস্কৃতির সঠিক উদাহরণ প্রদান।
  4. শিক্ষার্থীদের জীবনের উপর প্রতিফলন এর ব্যাখ্যা প্রদান।

উত্তরঃ

লোকসংস্কৃতি লােকসংস্কৃতির ধারণাঃ

সংস্কৃতি বলতে যা বুঝায় লােকসংস্কৃতি তারই একটি অংশ। লােকসংস্কৃতির বিশেষত্ব নিহিত আছে “লােক” কথাটির মধ্যে। এখানে পারিভাষিক শব্দ “লােক” -এর অর্থ হল মুলত গ্রামীণ, যার অধিকাংশই কৃষিকেন্দ্রিক জীবিকানির্ভর জনগােষ্ঠী। ঐতিহ্যনুসারী বৃহস্তর গ্রামীণ জনগােষ্ঠীর ধর্মীয় ও সামাজিক বিশ্বাস, আচার-আচরণ ও অনুষ্ঠান, জীবন-যাপন প্রণালী, শিল্প ও বিনােদন ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা সংস্কৃতিকে সহজ ভাষায় লােকসংস্কৃতি বা জনসংস্কৃতি বলা হয়। বাংলাদেশ একটি গ্রামপ্রধান দেশ। গ্রামের বিশাল জনগােষ্ঠী নিজস্ব বিশ্বাস, কর্মপ্রক্রিয়া, বিনােদন ও জীবনপ্রণালীর মাধ্যমে শতশত বছর ধরে যে বহুমুখী ও বিচিত্রধর্মী সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে, তাই বাংলার লােকসংস্কৃতি নামে অভিহিত।

লােকসংস্কৃতির প্রধান উপাদানগুলােকে চারটি প্রধান ধারায় ভাগ করা হয়:

বস্তুগত,

মানুষজত,

অনুষ্ঠানমূলক

এবং প্রদর্শনমূলক।

আমাদের সামাজিক জীবনে প্রচলিত চারটি লােকসংস্কৃতির উপাদান চিহ্নিত করা হলাে এবং এই উপাদানগুলাে আমার জীবনে যে ধরনের প্রভাব ফেলে তা বর্ণনা করা হলাে

প্রচলিত লােকসংস্কৃতিঃ সামাজিক জীবনে প্রচলিত লােকসংস্কৃতি যেমন, অনেকদিন খরা হলে অর্থাৎ বৃষ্টি না নামলে বৃষ্টি নামানাের জন্য গ্রামের মেয়েরা একটি অনুষ্ঠান করে। তারা কুলা নিয়ে বাড়ি বাড়ি যায়। মুখে বৃষ্টির গান গায় বা ছড়া কাটে। বাড়ির মেযেরা কলার উপর পানি ঢেলে দেয়। তারা বিশ্বাস করে এভাবে আকাশ থেকে বৃষ্টি নামবে। আধুনিক সেচ ব্যবস্থার কারনে এ রীতির প্রচলন বর্তমানে নেই বললেই চলে। বাংলাদেশের লােকসংস্কৃতিতে শত শত বছরের এতিহ্য হিসেবে এখনাে টিকে আছে নৌকা বাইচ। সাধারণত ভাদ্র-আশ্বিন মাসে নদীনালা যখন পানিতে টইটুথুর থাকে সেসময়ে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়। নৌকা বাইচের সময় ঢােল ও করতালের সাথে সাথে মাঝি-মাল্লারা এক সুরে গান গেযে বৈঠা চালান। প্রচলিত লােকসংস্কৃতির মধ্যে উল্লেখযােগ্য আরেকটি লােকসংস্কৃতি হল গরুর গাড়ির দৌড়, বৃহওর যশােরে এটি একটি জনপ্রিয় খেলা। ফসল তােলার পর কৃষকদের আনন্দ দিতে খলি মাঠে এ দৌড় প্রতিযােগিতা অনুষ্ঠিত হ্য। আর গরুর গাড়ি নিয়ে এ খেলায় অংশ নেন মূলত কৃষকেরাই। রােমাঞ্চকর এই প্রতিযােগিতাকে ঘিরে গ্রামীন মেলাও বসে। বাংলাদেশের লােকজ সংস্কৃতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে নানারকম লােকজ গান। ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, মুর্শিদী, মারফতি, বাউলগানসহ নানান লােকজ গানে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ।

বাংলাদেশের লােকসংস্কৃতির অন্যতম উপাদান গ্রামীণ মেলা। বাংলাদেশের সর্বত্রই এখনাে প্রচুর মেলা বসে। গ্রামের পরিমন্ডল অতিক্রম করে এখন শহরেও ছড়িয়ে পড়ছে মেলার সংস্কৃতি। তবে হাজার বছরের পুরনাে গ্রামীন মেলা দিনে দিনেই তার পূর্বের রুপ হারাচ্ছে। বাংলাদেশের লােক সংস্কৃতিতে যুগ যুগ ধরে টিকে আছে নকশিকীথা। এখনাে বাংলাদেশের যশাের, জামালপুরসহ গ্রাম বাংলার বিভিন্ন এলাকার ঘরে ঘরে তৈরি হয় নজরকাড়া নকশিকীথা ঐতিহ্যবাহী নকশি কাথা এখন বাংলাদেশের গন্ডি পেরিযে জায়গা করে নিয়েছে বিশ্ব দরবারে। আমার জীবনে যে ধরনের প্রভাব ফেলে যুগ যুগ ধরে সাধারণ মানুষ যে সংস্কৃতি লালন করে আসছে সাধারণ অর্থে তাই লােকসংস্কৃতি। লােকসংস্কৃতি বলতে আমরা বুঝি সাধারণ মানুষ ও তার সমাজের সংস্কৃতি। অর্থাৎ লােক সমাজের সংস্কৃতি। লােকসংস্কৃতির জন্ম সাধারণ মানুষের মুখে মুখে, তাদের চিন্তা ও কর্মে। হাজার বছর ধরে এই সংস্কৃতি এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে ছড়ে পড়তে থাকে। বাংলাদেশে আদিকাল থেকেই মানুষ লােকসংস্কৃতি লালন করছে। মানুষের মুখে মুখে চলা লােকসংস্কৃতির অনেক কিছুই সময়ে সাথে সাথে একটু একটু করে পরিবর্তন হযেছে।

লােকসংস্কৃতির যাত্রা শুরু হয়েছে গ্রামীণ কৃষিজীবী সমাজের মধ্য থেকে। যেসব বিষয়ে লােকসংস্কৃতির পরিচয় রযেছে তাকে লােকসংস্কৃতির উপাদান বলা হ্য। যেমন- তাঁত শিল্প, কাঁসা-শিল্প, মৃৎশিল্প, নকশি কাথা শিল্প, লােক কাহিনী বা কিচ্ছা, লােকগীতি, লােকচিকিৎসা, লােকসংগীত, প্রবাদপ্রবচন, খনার বচন, ডাকের কথা, লােকনাটক ইত্যাদি।কতক রীতি বা আচার এর উপর ভিত্তি করে লােকসংস্কৃতি গড়ে ওঠে। যেমন- হিন্দুমুসলিম নির্বিশেষে পীর-ফকির, সাধু-সন্ন্যাসী বা মৌলভী-পুরােহিতদের কাছ থেকে তাবিজকবজ, পানি পড়া ইত্যাদি রােগমুক্তির জন্য ব্যবহার করে। গ্রামীণ জীবনের আনন্দ-বেদনার কাব্য, জীবনবােধের প্রকাশ। তাদের পােশাক, খাবার, প্রার্থনা, ফসল, ব্যবহার্য জিনিসপত্র, বাসস্থান, বাহন, জীবন সংগ্রাম, ছন্দ, বিরহ এ সবই লােকসংস্কৃতিকে রূপ দ্যে। লােকসংস্কৃতির মাধ্যমে তার সামগ্রিক প্রকাশ ঘটে। লােকগানে, কবিতায়, সাহিত্যে, উৎসবে, খেলাধুলাতেও প্রকাশ পায়। লােকসংস্কৃতি।

সকল পোস্টের আপডেট পেতে ‍নিচের ফেসবুক আইকনে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেইজে জয়েন করুন।

Check Also

বই পড়ার অভ্যাস গঠনে লাইব্রেরির গুরুত্ব বিশ্লেষণ। ৯ম শ্রেণি [৩য় সপ্তাহ] বাংলা

৯ম শ্রেণির বাংলা এসাইনমেন্ট এর নির্ভুল এবং পূর্ণাঙ্গ উত্তর প্রকাশ করা হলো। প্রিয়  ৯ম শ্রেণীর …