অষ্টম শ্রেণীর পঞ্চম সপ্তাহের নির্ধারিত বাংলা বিষয়ের আজকের টপিকস। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শিরোনামে 500 শব্দের মধ্যে একটি প্রবন্ধ রচনা। যা বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট dshe.gov.bd তে প্রকাশ করা হয়েছে। আপনি আমাদের ওয়েবসাইট থেকে হাজার বছর শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা টি ডাউনলোড করতে পারবেন। রচনা টি ডাউনলোড করতে আমাদের প্রকাশিত পোস্টটি পড়তে থাকুন।
আরও দেখুনঃ
৮ম শ্রেণীর ৫ম সপ্তাহ বাংলা এসাইনমেন্ট উত্তর 2021
প্রিয় অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বন্ধুরা। তোমাদের জন্য প্রতি সপ্তাহে মত আজকেও আমরা অষ্টম শ্রেণীর পঞ্চম সপ্তাহের নির্ধারিত বাংলা বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক গৃহীত ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণী এসাইনমেন্ট কার্যক্রম 2021এর সকল প্রশ্নের সমাধান আমরা প্রকাশ করে আসতেছি। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে অষ্টম শ্রেণীর পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের এসাইনমেন্ট এর উত্তর প্রকাশ করা হলো। অষ্টম শ্রেণির পঞ্চম সপ্তাহ বাংলা এসাইনমেন্ট এর উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন।
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ
ভূমিকা
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি নাম, চেতনা ও অধ্যায়। তার জন্ম না হলে হয়তো আমরা স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র পেতাম না। তিনি একইসঙ্গে ডাক দিয়েছিলেন স্বাধীনতা ও মুক্তির। তার সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি বীরের মতো লড়াই করে স্বাধীন ভূখণ্ড অর্জন করে বিশ্ব মানচিত্রে সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করেছে। এটি অনস্বীকার্য যে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুধু বাঙালির নয়, সমগ্র মানবজাতির ইতিহাসেই এক অবিনাশী গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। আর এই অধ্যায়ের মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
বাংলার স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। স্কুলজীবনেই বঙ্গবন্ধু রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন, ছোটবেলা থেকেই তার রাজনৈতিক প্রতিভার প্রকাশ ঘটতে থাকে। তিনি যখন মিশনারি স্কুলে পড়তেন তখনই স্কুলছাত্রদের পক্ষ থেকে ছাত্রাবাসের দাবি তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছিলেন, যা সত্যিই বিরল ও তার রাজনৈতিক চেতনা বিকাশের একটি শুভ লক্ষণ। কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তির বছরই বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে পড়েন।
রাজেনৈতিক জীবন ও অবদান
মাত্র ২৩ বছর বয়সে বঙ্গবন্ধু সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং ১৯৪৩ সালে প্রাদেশিক মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন, তার প্রতিষ্ঠিত ছাত্রলীগ পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরপর ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনেও শেখ মুজিবুর রহমান বলিষ্ঠ নেতৃত্ব প্রদান করেন, যা বাঙালিদের মধ্যে ঐক্য ও স্বাধীনতার চেতনা জাগিয়ে তোলে। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও জনমুখী তৎপরতার কারণে ১৯৫৩ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগের (পরিবর্তিত নাম) সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু লাহোরে তার ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি পেশ করেন যাতে পূর্ব পাকিস্তানের পরিপূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের রূপরেখা বর্ণিত ছিল। এর মাধ্যমেই মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার আন্তর্জাতিক চাপে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিলে ১০ জানুয়ারি তিনি নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং পূর্ণোদ্যমে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেন।
স্বাধীনতার পর দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদান
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বাঙালি জাতিকে আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। স্বাবলম্বী জাতি গঠনের লক্ষ্যে তিনি অর্থনৈতিক নীতিমালা ঢেলে সাজান। স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ও কাজের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করেন যার লক্ষ্য ছিল – দুর্নীতি দমন, ক্ষেত-খামার ও কলকারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধি, জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি, শোষণহীন সমাজ গঠন ও জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা। সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে অর্থনৈতিক মুক্তির এই সংগ্রামে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি অভূতপূর্ব সাড়া পান। অতি অল্প সময়ের মধ্যে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে। দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, দুর্নীতি- চোরাকারবারি বন্ধ হয়। দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসতে শুরু করে। ধীরে ধীরে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ সঙ্কটাবস্থা কাটিয়ে উঠতে শুরু করে, স্বাধীনতার সুফল পৌঁছতে শুরু করে গণমানুষের দোরগোড়ায়।
উপসংহার
বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বরণের পর বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। দীর্ঘ ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে বর্তমানে তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে অনেক বেশি শক্তিশালী। জাতির পিতা যে দারিদ্র, ক্ষুধামুক্ত সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০-২১ সালকে মুজিববর্ষ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা ক্ষুধা, দারিদ্র, নিরক্ষরতামুক্ত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে বিনির্মাণই হোক মুজিববর্ষে আমাদের সবার অঙ্গীকার।