একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার মৌলিক কার্যাবলি বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের উপর’- উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন।

আজ এইচএসসি 2021 সালের পরীক্ষার্থীদের ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট এর পূর্ণাঙ্গ উত্তর প্রকাশ করা হলো। আপনারা যারা এইচএসসি 2021 সালের প্রথম সপ্তাহের ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা প্রথম পত্রের উত্তর সম্পন্ন করে। এইচএসসি দ্বিতীয় সপ্তাহের ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর জন্য অধীর আগ্রহে ছিলেন। তাদের জন্য আমরা বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এইচএসসি ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নের আলোকে সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ উত্তর তৈরি করেছি। আপনি যদি এইচএসসি 2021 সালের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী হন। তাহলে এই ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্র অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর ডাউনলোড করতে নিচের অংশ ভালভাবে পড়ুন।

এইচএসসি ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্র প্রশ্ন 2021

ছাত্র-ছাত্রীদের বোঝার সুবিধার্থে শুরুতে ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন তুলে ধরা হলো। ফলে ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্ন অনুযায়ী উত্তর ডাউনলোড করে নিজ খাতায় এসাইনমেন্ট তৈরি করে নিতে পারবেন। দ্বিতীয় সপ্তাহ ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্র প্রশ্ন নিচে দেওয়া হল।

অ্যাসাইনমেন্টঃ

একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার মৌলিক কার্যাবলি বিশ্লেষণ ও প্রয়ােগের উপর’- উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন।

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি)ঃ

  1. ব্যবস্থাপনার ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে।
  2. ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে হবে।
  3. প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সাফল্যের জন্য ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি কিভাবে প্রয়ােগ করতে হয় তা বিশ্লেষণ করতে
  4. ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি বর্ণনা করতে হবে।

এইচএসসি ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর 2021

প্রিয় এইচএসসি 2021 সালের পরীক্ষার অংশগ্রহণকারী ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ছাত্র ছাত্রীরা। আমরা আপনাদের প্রকাশিত অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্নের নং অনুযায়ী উত্তর প্রদান করেছে। শেষের ঘর নং উত্তর দিয়ে উদাহরণ দিয়েছি আপনারা চাইলে নিজের মত করে উদাহরণ দিয়ে আসন তৈরি করে নিতে পারেন।

উত্তরঃ

ক) ব্যবস্থাপনার ধারণাঃ

একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার মৌলিক কার্যাবলি বিশ্লেষন ও প্রয়ােগের উপর- উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন করা হলাে। ব্যবস্থাপনার ধারণা: ব্যবস্থাপনার ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘Management’ শব্দটি ইতালীয় ‘Maneggiare’ শব্দ থেকে উৎপত্তি হয়েছে, যার অর্থ ‘To train up the horse’ অর্থাৎ অশ্বকে প্রশিক্ষিত করে তােলা। আবার অনেকে মনে করেন ‘Management’ শব্দটি ফরাসি ‘Menager’ ও ‘ Menage’ শব্দদ্বয় হতে এসেছে। ‘Menager’ শব্দের অর্থ পরিবার পরিচালনা করা (To direct a household) এবং ‘Menage’ শব্দের অর্থ পথ প্রদর্শন করা (An act of guiding)। ব্যবসায়িক পরিবর্তন ও সময়ের দাবিতে ব্যবস্থাপনার ইতালীয় ও ফরাসি উৎপত্তিগত শব্দাবলিরও প্রায়ােগিক পরিবর্তন ঘটেছে।

আধুনিককালে।ব্যবসায় জগতে ব্যবস্থাপনা শব্দটি কর্মীদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জনে পরিচালিত করার অর্থে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই ব্যবস্থাপনার ধারণাকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে- Manage + Men + T (Tactfully) = Management। অর্থাৎ, মানুষকে কৌশলের সাথে পরিচালনা করাই ব্যবস্থাপনা। মূলত প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় প্রয়ােজনীয় 6M অর্থাৎ Man, Machine, Material, Money, Market এবং Method-কে যথাযথভাবে কাজে লাগানাের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টাই হলাে ব্যবস্থাপনা। ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে নিয়ােজিত মানবসম্পদ এবং বিভিন্ন উপায় উপকরণ যেমন: যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, অর্থ, বাজার, পদ্ধতি, তথ্য, সম্পদ ইত্যাদিকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছাতে চায়।

পরিশেষে বলা যায়, প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, কর্মসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয়সাধন ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের উপায়-উপকরণ ও সম্পদসমূহকে দক্ষতার সাথে ফলপ্রসূ উপায়ে কাজে লাগানাের প্রক্রিয়াকে ব্যবস্থাপনা বলে।

খ) ব্যবস্থাপনার কার্যাবলিঃ

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের উপায়-উপকরণের কার্যকর ব্যবহারের প্রয়াসে যে সকল সাধবারণ প্রশাসনিক কাজ-কর্ম অপরিহার্যভাবে সম্পাদন করতে হয় তার সমষ্টিই হলাে ব্যবস্থাপনা কার্যাবলি। ব্যবস্থাপনা কার্যাবলি পারস্পরিক নির্ভরশীল ধারাবাহিক কার্যসমষ্টি ও চক্রাকারে আবর্তিত হওয়ায় এগুলােকে ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াও বলা হয়। এ প্রক্রিয়া ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শেষ হয়। নিম্নে ব্যবস্থপনার ৭ টি কার্যাবলি ব্যাখ্যা করা হলাে :

প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যবস্থপনা যে সকল মৌলিক বা মুখ্য কার্যাবলি সম্পাদন করে তা নিম্নরূপ

১. পরিকল্পনা প্রণয়নঃ

ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার সর্বপ্রথম কাজ হচ্ছে পরিকল্পনা প্রণয়ন। প্রতিষ্ঠানের কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানে কী কাজ করা হবে, কে করবে, কীভাবে করা হবে, কখন করা হবে ইত্যাদি বিষয়ে অগ্রিম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার প্রক্রিয়াকে পরিকল্পনা বলে। অর্থাৎ পরিকল্পনা হচ্ছে কোনাে কাজ করার পূর্বে সে বিষয়ে পূর্ব চিন্তা করে কাজের রূপরেখা তৈরি করা। সম্ভাবনা বা ধারণার পরিবর্তে বাস্তবতার আলােকে কাজ করার পূর্বে চিন্তা-ভাবনা করে শৃঙ্খলার সাথে কাজ করার জন্য ভবিষ্যৎ কার্য নকশা প্রণয়নের মানসিক অবস্থা হলাে পরিকল্পনা।

 ২. সংগঠিতকরণঃ

ব্যবস্থাপনার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলাে

সংগঠিতকরণ। প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলি ও উপকরণাদি চিহ্নিত করে প্রকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন বিভাগ উপ-বিভাগে বিভক্তকরণ; যােগ্যতা ও দক্ষতার আলােকে কর্মীদের দায়িত্ব কর্তৃত্ব, ও জবাবদিহিতা নির্ধারণ এবং পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণ ও কাজে লাগানাের প্রক্রিয়াকে সংগঠিতকরণ বলে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যে সকল বস্তুগত ও অবস্তুগত উপায়-উপকরণ ও সম্পদ প্রয়ােজন সেগুলাে সংগ্রহ করা, সুষ্ঠুভাবে সংরক্ষণ করা এবং যথােপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিতকরণকেই সংগঠিতকরণ বলা হয়।

৩. কর্মীসংস্থানঃ

প্রতিষ্ঠানের জন্য যােগ্য ও দক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে তােলার লক্ষ্যে উপযুক্ত কর্মী সংগ্রহ, নির্বাচন, নিয়ােগ ও উন্নয়নের কাজকেই কর্মীসংস্থান বলে। সংগঠন প্রক্রিয়ায় কাজ এবং প্রতিটা কাজের দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব নির্ধারণের পর ঐ কাজ সম্পাদনের জন্য যােগ্য জনবল সংস্থানের প্রয়ােজন পড়ে। এই জনবলের যােগ্যতা, আগ্রহ ও আন্তরিকতার ওপর প্রতিষ্ঠানের সাফল্য নির্ভর করে। তাই কর্মী নিয়ােগে ভুল করলে প্রতিষ্ঠানকে দীর্ঘমেয়াদে তার কুফল ভােগ করতে হয়। তাই কোথায়, কোন মানের, কি সংখ্যক লােকের প্রয়ােজন সে অনুযায়ী যােগ্য কর্মী নিয়ােগ করতে হয়।

৪.নেতৃত্ব ও নির্দেশনাঃ

নেতৃত্ব হলাে এমন একটি প্রভাব বিস্তারকারী কৌশল যার দ্বারা প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে কর্মীদের মধ্যে ইতিবাচক মনােভাব সৃষ্টি করে Bhinno Kichu তাদের সম্ভাব্য সর্বাধিক সামর্থ্যকে কাজে লাগানার চেষ্টা করা হয়। আর নির্দেশনা হলাে উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার কার্য বিশেষ। কর্মীদের সম্ভাব্য সর্বাধিক সামর্থ্যকে ব্যবহারের লক্ষ্যে কার্য সম্বন্ধে অবহিতকরণ, আদেশ-নির্দেশ প্রদান, পরামর্শ দান, প্রয়ােজনীয় তত্ত্বাবধান ও গতিশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে লক্ষ্যের দিকে পরিচালিত করার প্রক্রিয়াকে নির্দেশনা বলে।

৫.প্রেষণাঃ

নির্বাহীগণ যে উপায়ে বা প্রক্রিয়ায় অধীনস্থ কর্মীদের পূর্ণ কার্যক্ষমতা ব্যবহার ও কাজের প্রতি তাদের আকৃষ্ট বা উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি করে তাকে প্রেষণা বলে। প্রেষণা ব্যবস্থাপনার একটি মনস্তাত্ত্বিক কাজ, যা কর্মীদের কাজের প্রতি মনােবল, ইচ্ছা, আগ্রহ,কর্মশক্তি এবং উদ্দীপনা বৃদ্ধি করে থাকে। ফলে কর্মীরা তাদের সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে কর্ম সম্পাদনে সচেষ্ট হয়।

৬.সমন্বয়সাধনঃ

কোনাে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য এর বিভিন্ন বিভাগ, উপবিভাগ ও ব্যক্তিক প্রচেষ্টাকে ঐক্যবদ্ধ, সুসংহত, সংযুক্ত ও ভারসাম্য সৃষ্টি করার প্রক্রিয়াকে সমন্বয়সাধন বলা হয়। সমন্বয়ের মাধ্যমে মতানৈক্য দূর করে সকল বিভাগের মধ্যে সহযাগিতা, সমঝােতা, ভারসাম্য ও সামঞ্জস্যতা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এতে প্রাতিষ্ঠানিক কাজের মধ্যে নিরবচ্ছিন্নতা ও ধারাবাহিকতাবজায় থাকে।

৭.নিয়ন্ত্রণঃ

নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার সর্বশেষ ধাপ। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের কার্যাদি সম্পন্ন হয়েছে কি না তা পরিমাপ, বিচ্যুতি ঘটলে তার কারণ নির্ণয় ও বিশ্লেষণ এবং প্রয়ােজনীয় সংশােধনী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ বলে। প্রতিষ্ঠানের যে কোনাে কাজ শুরুর পূর্বে পরিকল্পনা প্রণীত হয়। তারপর সকল কাজ শেষে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ কতটা সম্পন্ন হয়েছে তা মূল্যায়নের প্রয়ােজন পড়ে। এতে ব্যবস্থাপনা কার্য কতটা দক্ষতার সাথে পরিচালিত হয়েছে তার প্রমাণ মেলে। নিয়ন্ত্রের মাধ্যমে পরবর্তী পরিকল্পনার সংশােধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। নিয়ন্ত্রের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনার জবাবদিহিতা ও কার্যদক্ষতার মান বৃদ্ধি পায়।

গ) ব্যবস্থাপনার গুরুত্বঃ

যে কোনাে সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টায় ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত শক্তিশালী উপাদান। প্রতিটা পরিবার, সমাজ, প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রসহ সর্বত্রই সঠিক পরিচালনা বা ব্যবস্থাপনার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিম্নে ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব আলােচনা করা হলাে:

 ১. উপকরণাদির সুষ্ঠু ব্যবহারঃ

উপকরণ বলতে কার্যসম্পাদনের জন্য ব্যবহার্য বস্তকে বুঝায়। তাই উৎপাদনের কাজে লাগে এমন প্রয়ােজনীয় বস্তুকে উৎপাদনের উপকরণ বলে।ভূমি, শ্রম, মূলধন ইত্যাদি উপকরণ কোথাও থাকাই উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট নয়। এগুলাে যথাযথ ব্যবহারের জন্য যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তাই ব্যবস্থাপনা ITerry ও Franklin বলেছেন, “ব্যবস্থাপনা হলাে সেই ধরনের কাজ যা অসংগঠিত মানুষ ও বস্তুগত সম্পদকে ব্যবহারযােগ্য ও ফলদায়ক পরিণতির দিকে নিয়ে যায়।”

২.দক্ষতা বৃদ্ধিঃ

দক্ষতা হলাে কম খরচ (Input) এ বেশি কাজ বা ফল (Output) লাভের সামর্থ্য। সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে পারাও দক্ষতা হিসেবে গণ্য। ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি করে। কারণ উত্তম ব্যবস্থাপনার অধীনে এর প্রতিটা জনশক্তির দক্ষতা বাড়ে। ৩. শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা : শৃঙ্খলা বলতে রীতি, নিয়ম, নীতি, সুব্যবস্থা ইত্যাদিকে বুঝায়। একটা প্রতিষ্ঠানে যদি এগুলাে না থাকে তবে ঐ প্রতিষ্ঠান কখনই ভালাে চলতে পারে না।একটা প্রতিষ্ঠানে এই শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব থাকে মূলত পরিচালক বা ব্যবস্থাপকগণের ওপর। তারা যদি তাদের কাজের মধ্য দিয়ে সর্বক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হন তবে ঐ প্রতিষ্ঠান ভালাে চলতে পারে না। আমাদের দেশে সর্বক্ষেত্রে যে বিশঙ্খলা লক্ষণীয় এর পিছনে মূল কারণ হলাে ব্যবস্থাপনা বা প্রশাসনের অদক্ষতা।

৪. উত্তম সম্পর্ক প্রতিষ্ঠাঃ

একটা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ যেমন- মালিক, ব্যবস্থাপক, শ্রমিক-কর্মী, ক্রেতা ও ভােক্তা, সরবরাহকারী ইত্যাদি সবার সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকা বর্তমানকালে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটা প্রতিষ্ঠানের দক্ষ ব্যবস্থাপনাই শুধুমাত্র তা নিশ্চিত করতে পারে। একটা পরিবারে বাবা-মার মধ্যে যদি উত্তম সম্পর্ক না থাকে তবে পরিবারে অশান্তির শেষ থাকে না। সন্তানদের মধ্যেও অস্থিরতা ও অস্বাভাবিকতা জন্ম নেয়। একটা প্রতিষ্ঠানেও এ কথা সর্বোতভাবে প্রযােজ্য। মালিক বা ব্যবস্থাপকদের মধ্যে যদি পারস্পরিক সম্পর্কের অভাব থাকে, গ্রুপিং-লবিং যদি নিত্যকার বিষয় হয় তবে নিচের স্তরে কর্মরত শ্রমিক-কর্মীরা তার দ্বারা দ্রুত প্রভাবিত হয়ে থাকে। এতে প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক, স্বচ্ছন্দ ও কর্মমুখী পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটা প্রতিষ্ঠানের দক্ষ ব্যবস্থাপনাই শুধু সর্বস্তরে উত্তম সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে সে অবস্থা থেকে প্রতিষ্ঠানকে সুরক্ষাদান ও সামনে এগিয়ে নিতে পারে।

৫. কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টিঃ

কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টি বলতে মানুষকে কাজে লাগানাের মতাে নতুন নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টিকে বুঝায়। উত্তম ব্যবস্থাপনা শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নই নিশ্চিত করে না ব্যবসায় সম্প্রসারণ ও নতুন নতুন ব্যবসায়  গঠনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশে স্কয়ার গ্রুপ, আকিজ গ্রুপ, প্রাণ গ্রুপসহ যে সকল প্রতিষ্ঠান দেশকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে- তা তাদের ব্যবস্থাপনার দক্ষতার কারণেই সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশের গার্মেন্টস ব্যবসায়ীগণের অনেকেই তাদের ব্যবস্থাপনার দক্ষতার কারণে নানান সীমাবদ্ধতার মধ্যেও নতুন নতুন কারখানা

গড়ে হাজারাে শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সমর্থ হয়েছেন। এতে দেশে যেমনি বেকার সমস্যার লাঘব হচ্ছে সেই সাথে মানুষের আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশ ও সমাজ উপকৃত হচ্ছে।

৬.গবেষণা উন্নয়নঃ

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যকার তীব্র প্রতিযােগিতা মােকাবেলা, ক্রেতা-ভােক্তাদের পরিবর্তনশীল রুচি ও চাহিদা পূরণ, ব্যবসায়ের নতুন নতুন দিগন্তের উন্মােচন ইত্যাদি প্রয়ােজনে প্রতিনিয়ত গবেষণা ও উন্নয়নের প্রয়ােজন হয়। কার্যকর ব্যবস্থাপনা এসকল কার্যক্রমে সহায়তা করে থাকে। ফলে প্রতিষ্ঠান সহজেই কাজুকিষত লক্ষ্য অর্জনে সচেষ্ট হয়ে থাকে।

৭. অর্থনৈতিক অবস্থা জীবনযাত্রার মানােন্নয়নঃ

কার্যকর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের কোনাে না কোনােভাবে আয়ের পরিমাণ বদ্ধি পায়। কর্মসংস্থান, পদোন্নতি, আর্থিক উন্নয়ন, সুলভে পণ্য বণ্টন, উন্নত পণ্য উৎপাদন ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা এর সাথে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সাহায্য করে থাকে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নকেhnaষিkich তরান্বিত করে। এভাবে জাতীয় উন্নয়নের ধারাও অব্যাহত থাকে। ফলে দেশের সার্বিক উন্নতি ত্বরান্বিত হতে থাকে।

ঘ) প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সাফল্যের জন্য ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি কিভাবে প্রয়ােগ করতে হয় তা বিশ্লেষণ করা হলঃ

ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি বিশ্লেষণ ও প্রয়ােগের মাধ্যমেই খুব সহজে অন্যকে দিয়ে কাজ করানাে যায়, এবং প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য অর্জন করা যায়। ব্যবস্থাপনার কার্যাবলির মাধ্যমে যেকোনাে প্রতিষ্ঠানের জন্য উত্তম পরিকল্পনা করা যায়। আর পরিকল্পনা সঠিক হলে প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য অর্জন করা যায়। কেনােনা পরিকল্পনা ছাড়া কোনাে কাজই ফলদায়ক হয় না।তেমনি, সংগঠন, কর্মসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয়সাধন ও নিয়ন্ত্রণ ছাড়া ও কোনাে প্রতিষ্ঠানের সাফল্য অর্জন করতে পারে না। একটি উদাহরণের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি বিশ্লেষণ ও প্রয়ােগের উপর প্রতিষ্ঠানের সাফল্য নির্ভর করে তা আলােচনা করা হলাে:

একটি বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আলােচনার পূর্বে অবশ্যই ব্যবস্থাপনা ও এর কার্যাবলী সম্পর্কে তাত্ত্বিক ও প্রয়ােগিক ধারণা থাকতে হয়। অপরাপর প্রতিষ্ঠানের মতাে বিদ্যালয়ও একটি প্রতিষ্ঠান। তাই ব্যবস্থাপনার কাবালিগুলাে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রযােজ্য। তাই বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার সাথে যারা জড়িত তাদের অবশ্যই ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি ও এর প্রায়ােগিক বিষয়গুলাে সম্পর্কে অবগত ও সচেতন  থাকতে হবে। বিদ্যালয় কোন বানিজ্যিক বা মুনাফাভােগী প্রতিষ্ঠান নয়, বরং সামজিক সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে এই প্রতিষ্ঠানটি সৃষ্টি হয়। তাই সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার সাথে কেবল পেশাগত লােকজনই জড়িত নয়। একটি বিদ্যালয়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য প্রধানশিক্ষক, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক অভিবাবক কমিটি, স্বানীয় সরকার, শিক্ষা বিভাগসহ নানাধরণের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত থাকতে হয়। তাই বিদ্যালয়ের সুফলতার জুন্য এর সাথে সম্পর্কিত সকল অংশীজনের প্রত্যাশা ও আকাংখাকে ধারণ করে এর সাথে পেশাগত ধ্যানধারণার সমন্বয় সাধন করা প্রয়ােজন। তবেই বিদ্যালয় তার অভীষ্ঠ লক্ষ্য অর্জনে Bhinno Kichu সক্ষম হবে।

সুতরাং, ব্যবস্থাপনার কার্যাবলির বিশ্লেষণ ও প্রয়ােগের উপর প্রতিষ্ঠানের সাফল্য।

আরও দেখুনঃ

2021 সালের এইচএসসি হিসাব বিজ্ঞান ১ম সপ্তাহ এসাইনমেন্ট উত্তর। HSC পরীক্ষার্থী ব্যাচ -2021 অ্যাসাইনমেন্ট

এইচএসসি ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বীমা ২য় সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর-2021। এইচএসসি পরীক্ষার্থী- 2021 অ্যাসাইনমেন্ট

এইচএসসি উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন এসাইনমেন্ট উত্তর 2021। HSC পরীক্ষার্থী ব্যাচ- 2021 (২য়-সপ্তাহ) অ্যাসাইনমেন্ট।

সকল পোস্টের আপডেট পেতে ‍নিচের ফেসবুক আইকনে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেইজে জয়েন করুন।

Check Also

চিহ্নিত চিত্রসহ জীবকোষের গঠন। ৬ষ্ঠ শ্রেণি [৩য় সপ্তাহ] বিজ্ঞান এসাইনমেন্ট উত্তর 2022।

৬ষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান এসাইনমেন্ট এর নির্ভুল এবং পূর্ণাঙ্গ উত্তর প্রকাশ করা হলো। প্রিয়  ৬ষ্ঠ শ্রেণীর …